খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা:
পূর্বশত্রুতার জেরে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের থলিপাড়া গ্রামে আলোচিত বাবা ছেলে হত্যাকা-ের চিহ্নিত আসামীরা মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবারের সদস্যরা। শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাব হলরুমে নিহতের পরিবারের সদস্যরা হত্যাকারীদের গ্রেফতারে পুলিশের অবহেলার তীব্র প্রতিবাদ, অবিলম্বে পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা প্রদান ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত চিরঞ্জিব ত্রিপুরার ছেলে নিহার কান্তি ত্রিপুরা।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলা হয়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা আ’লীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মংশেপ্রু চৌধুরী অপু ও সদর উপজেলা আ’লীগ নেতা খোকনেশ্বর ত্রিপুরাসহ হত্যা মামলার অন্যান্য আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। হুমকি দিচ্ছেন হত্যা মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য। মামলা প্রত্যাহারের জন্য আসামিদের অব্যাহত হুমকি থেকে বাঁচতে প্রাণভয়ে নিহতের পরিবারের সদস্যরা থলিপাড়ার গ্রামের বসতি ঘরবাড়ি ছেড়ে জেলা শহরে আত্মীয়ের বাড়িতে বসবাস করছি। এতেও রেহাই পাচ্ছেননা তারা। এ ব্যাপারে নতুন করে গত ৬ জুন খাগড়াছড়ি সদর থানায় হুমকি দাতাদের নাম উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরী করা হলেও পুলিশ এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এমতাবস্থায় নিহতের পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়। এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন নিহত চিরঞ্জিত ত্রিপুরার স্ত্রী ভবেলক্ষ্মী ত্রিপুরা, নিহত কর্ণ জ্যোতি ত্রিপুরার স্ত্রী বিজলী ত্রিপুরা, তার ছোট ভাই উমেশ কান্তি ত্রিপুরা ও ছোট বোন রিণিকা ত্রিপুরা।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ১১ মে রাতে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের নুনছড়ি দেবতা পুকুর এলাকার থলিপাড়া গ্রামে স্থানীয় ইউপি মেম্বার কালী বন্ধু ত্রিপুরার নেতৃত্বে চিরঞ্জিব ত্রিপুরা ও তার পুত্র কর্ণ জ্যোতি ত্রিপুরাকে গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। এসময় ঘটনাস্থলেই নিহত হন বাবা-ছেলে। এ হামলায় গুরুতর আহত হন চিরঞ্জিবের স্ত্রী ভবেলক্ষী ত্রিপুরা ও তার ছেলে নিহত কর্ণ জ্যোতির স্ত্রী বিজলী ত্রিপুরা। হামলার পরের দিন নিহত ছোট ছেলে নিহার কান্তি ত্রিপুুরা বাদী হয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, খোকনেশ্বর ত্রিপুরা, ইউপি সদস্য কালী বন্ধু ত্রিপুরাসহ ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ১০ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যার মামলার পর থেকেই নিহতের পরিবারের সদস্যরা থলিপাড়ার বসতি ঘর বাড়ি ছেড়ে জেলা শহরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বসবাস করছেন।
এই বিষয়ে কথা বললে পুলিশ সুপার আলী আহমেদ খান বলেন ঘটনাটি অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক। পুলিশের কোন অবহেলা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন প্রতিদিন পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। কয়েকজন আসামীকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।