ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় মেয়ের তালাকপ্রাপ্ত জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে তার শাশুড়ি হামেদা বেগম (৪৫) খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। রোববার সকালে উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের দক্ষিণ শোল্লা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হামেদা বেগম ওই গ্রামের মৈফল ইসলামের স্ত্রী।
এ ঘটনায় জামাই শাওন মোল্লাকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত ছুরি। শাওন মোল্লা পাশের উলাইল গ্রামের আবদুল কাদের মোল্লার ছেলে। একই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় শাওন মোল্লার প্রাক্তন স্ত্রী তানিয়া (২০) এবং শ্যালক হাসানকে (১৭) রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত হামেদা বেগমের মেয়ে কণা আক্তার বলেন, ‘এক বছর আগে আমার বোন তানিয়ার সঙ্গে শাওন মোল্লার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই বোনকে বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলত এবং একটি অটো গাড়ি কিনে দেওয়ার জন্য চাপ দিত। রাজি না হলে বোনকে মারধর করত। পরে জানতে পারি শাওন মাদকাসক্ত। মাদকের টাকা না পেলেই বোনকে মারধর করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয় নিয়ে প্রায়ই তানিয়ার সঙ্গে শাওন ও তার পরিবারের বিরোধ চলছিল। একপর্যায়ে ঈদের কিছুদিন পরে বিষয়টি নিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বসে তালাকের সমাধান দিয়ে দেন। সেই সমাধানে দুজন দুই পরিবারে বসবাস করা শুরু করে।’
কণা বলেন, ‘তিনি (শাওন মোল্লা) পারিবারিক বিরোধের রাগে ও ক্ষোভে আজ আমাদের সকলকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। রোববার সকালে দুই হাতে দুটি ছুরি নিয়ে হঠাৎ আমাদের বাড়িতে আসে। প্রথমে বোনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। তার চিৎকারে মা এগিয়ে গেলে তাকেও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এরপর ভাইকেও ছুরিকাঘাত করে। তাদের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে আমি ও আমার ছেলে বেঁচে যাই। এ সময় এলাকাবাসী শাওনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। মাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বোন ও ভাইকে ঢাকার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।’
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, অভিযুক্ত শাওন মোল্লাকে জনগণের সহায়তায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। প্রাথমিকভাবে তিনি খুনের দায় স্বীকার করেছেন।
ওসি আরও বলেন, লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত হামেদা বেগমের স্বামী মৈফল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।