সবুজের পর সবুজ। কোথাও মিশেছে দিগন্তে, কোথাও সাগরে। সবুজের মাঝে শোভা পাচ্ছে বৃক্ষ। প্রকৃতির অমোঘ ধারায় সবুজের মাঝে তৈরি হয়েছে আঁকাবাঁকা সরু নালা। নালায় চিকচিক করছে জলরাশি। আবার জোয়ারের সময় নালাগুলো পূর্ণ হয় পানিতে। এখানে চলে পাখি, পানির ঢেউ আর বাতাসের মিতালি। কোথাও দৃশ্যমান কেওড়া বন। দেখা যায় কেওড়া গাছের শ্বাসমূল। সমদ্রসৈকতজুড়ে থাকা বিস্তীর্ণ ঘাসগুলো দিয়েছে অন্যরকম আমেজ। যেন সমুদ্রসৈকতের প্রকৃতির কোলে আশ্রিত হয়েছে সবুজ গালিচা। তৈরি হয়েছে অপরূপ-নয়নাভিরাম বিস্তৃত এক সবুজ আঙিনা। অনিন্দ্য সুন্দর গুলিয়াখালী সৈকতকে সাজাতে প্রকৃতি এতটুকু কার্পণ্য করেনি।
জানা যায়, গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতটি চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নে নদীর মোহনায় অবস্থিত। এটি মুরাদপুর সৈকত নামেও পরিচিত। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস প্রকোপের লকডাউনের আগে প্রতিদিনই অসংখ্য দর্শনার্থীর জটলা থাকত। ভিড় জমত নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের। তবে টানা প্রায় চার মাস লকডাউনকালে সৈকত নীরব, নিস্তব্ধ। প্রকৃতিকে বিরক্ত করেনি কেউ। ছিল না পর্যটকদের সমাগম। ফলে প্রকৃতির সৈকতকে প্রকৃতিই আপন করে নিয়েছে। জয়জয়কার হয়েছে সবুজের। রূপ খুলেছে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দের্যের পুরোধা সবুজ সৈকতটি। স্থানীয়দের দাবি, গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতটি অপার সম্ভাবনাময়ী। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের শেষ নেই এ সৈকতে। তাই সুনির্দিষ্ট উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে এটিকে একটি নান্দনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা যায়। তখন পর্যটক আরও কয়েকগুণ বাড়বে। সীতাকুন্ডের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, ‘প্রতিদিন এ সৈকতে অনেক পর্যটক আসেন। এটি নয়নাভিরাম একটি প্রাকৃতিক সমুদ্রসৈকত। তবে জায়গাটি বন বিভাগের।
তারা হয়তো সমুদ্রসৈকতটির সৌন্দর্য বর্ধনে একটি পরিকল্পনা তৈরি করছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ মোহাম্মদ বলেন, ‘গুলিয়াখালী সৈকতটির আয়তন প্রায় এক কিলোমিটার হবে। গত প্রায় দুই বছর ধরে এখানে সবুজায়ন দৃশ্যমান যাচ্ছে। এরপর থেকে শুক্র-শনিবার অসংখ্য দর্শনার্থী আসে। এখানে এলে সাগর, লেক, বেড়িবাঁধ, হরিণ ও সবুজ জলরাশি দেখা যায়। বলা যায়, এটি একটি সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক বিনোদন কেন্দ্র।’ জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ডের লামার বাজার থেকে গুলিয়াখালী সৈকতের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। সীতাকুন্ড বাসস্ট্যান্ড ব্রিজের পাশ থেকে সরাসরি অটোরিকশা দিয়ে গুলিয়াখালী বিচের বাঁধ পর্যন্ত যাওয়া যায়। এ সৈকতের কাছেই আছে সীতাকুন্ড ইকোপার্ক, চন্দ্রনাথ মন্দির ও পাহাড়, ঝরঝরি ঝরনা, কমলদহ ঝরনা, কুমিরা-সন্দ্বীপ ঘাট, মহামায়া লেক, খৈয়াছড়া ঝরনা, নাপিত্তাছড়া ঝরনা, সহস্রধারা ঝরনা।
ঢাকা পোষ্ট ||