পৃথিবীর বুকে এমন কিছু সৌন্দর্য দেখেছি যে সৌন্দর্য থেকে চোঁখ ফেরাতে পারিনি ওই মুহূর্তে। এখনো যখন স্মৃতির দিকে ফিরে তাকাই তখনো খুঁজে পাই এমন সব টুকরো স্মৃতি-যেখানে মিশে আছে অপূর্ব পাহাড়, মেঘ আর লেকের ভেতর আমার ভেসে বেড়ানোর গল্প।
একদিন খুব ভোরে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে সাদা সাদা মেঘের ভেলার ভেতর এক স্বর্গ রচনা করতে করতে বেরিয়ে পড়লাম সুইজারল্যান্ডের ইন্টারলেকেন থেকে লেক থুন আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে।
সেদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেছিলাম। চোখে ছিল আমার মেঘের কনার স্পর্শ, ঠোঁটের কোণে ছিল আমার শিশিরের ভেজা হাসি। তারপর ভোরের এক চিলতে রোদ যখন নেমে এসেছিল এমন অপূর্ব স্নিগ্ধ একটি লেকের উপর, দু’পাশের ঘন সবুজ পাহাড়ের ভ্যালি তখন আমার ভেসে যাওয়া তরী’কে ধীরে ধীরে আঁকাবাঁকা পথ ধরে নিয়ে যেতে থাকলো দূর থেকে দূরের অচেনা বৈচিত্রে। সাথে ছিলেন আমার মা।
লেকটি অভিযাত্রার প্রথমদিকে সকালে মেঘের ভেতর লেকটির রং একরকম দেখতে পেলাম, যখন রোদ উঠতে শুরু করল তখন পরিবর্তিত হতে থাকলেও ভিন্ন রং।
জীবনের অভিনাশী ইচ্ছেগুলো যখন চোখের সামনে এভাবেই দেখতে শুরু করেছিলাম তখন আর আমাকে থামতে হয়নি। আমার ইচ্ছে আর স্বপ্ন এক করে আমি চলছি তো চলছি। চোখ মেলেই যখন আমি এমন অপূর্ব সৌন্দর্য আবিষ্কার করতে শুরু করেছিলাম-অচেনা পথ গুলোকে আমি আপন ভেবে চিনে নিয়েছি এভাবেই।
আমি তখন ছোট ছোট উপকূল ছেড়ে মহাসাগর আবিষ্কার করার জন্য বেরিয়ে পড়েছিলাম। ঘরে বসে কল্পনার চেয়েও এই পৃথিবী যে কত সুন্দর তা আমি দেখেছি।
মা আর আমি তখন সুইজারল্যান্ড ব্যাকপ্যাক নিয়ে ২৮ দিনের সফরে বের হয়েছিলাম ২০১২ সালে। সুইজারল্যান্ডটাকে তন্নতন্ন করে ঘুরে দেখাই ছিল আমাদের একমাত্র ইচ্ছে। পাহাড়ের বাঁকে অপূর্ব লেক থুন, লেক লুজান, সুইস আল্পসের কাছাকাছি ছোট ছোট গ্রাম গুলো-লাউটার বুনেন, উনগেন, ক্লাইনেসেডিংএ বিভিন্ন লোকেশনে একেকদিন একেক দিকে আমরা বেরিয়ে পড়তাম। খুব ভোরে অভিযাত্রা শেষে সন্ধ্যার দিকে আবার আমরা ইন্টারলেকেন- এ আমাদের মেঘ পাহাড়ি নীড়ে ফিরে আসতাম।
ঢাকা পোষ্ট ||