চাঁদপুরের মতলব থেকে রাকিবুল হাসান : করোনার ভয়াল থাবা যখন চাঁদপুরের মানুষের অবস্থা টালমাটাল। প্রচুর রোগী হাসপাতালমুখী হতে শুরু করলো কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন এর ব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের অবস্থা নাজেহাল। অনেকেই দিগ্বিদিক ছুটে অক্সিজেন না পেয়ে মারা যান পথেই। এই দৃশ্য আমাদের মনে দাগ কাটে। আমরা জানি, শহরে অক্সিজেন সিলিন্ডার পর্যাপ্ত থাকলেও গ্রামে অক্সিজেন সিলিন্ডার অপ্রতুল। সে সংকট নিরসনে লোটাস-বাড চ্যারিটি ফোরাম উদ্যোগ নেয় চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের মানুষের জন্য অক্সিজেন সরবরাহ করার।
লোটাস-বাড চ্যারিটি ফোরাম এর উদ্যোগে যোগ দেয় অনির্বাণ সমাজ কল্যাণ ফাউন্ডেশন এবং এর সমন্বয়ে এগিয়ে আসেন সমাজহিতৈষী মিয়া মামুন ও মাসুদ হাজী। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় ‘নারায়ণপুর অক্সিজেন ব্যাংক’ নামে মতলবের অন্তর্গত বিভিন্ন গ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্টে ভুগা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ ও সুবিধাবঞ্চিত রোগীদের খাদ্য ও ঔষধ সহায়তা করছেন। এ কঠিন কাজে শ্রম দিচ্ছেন দুটি সংগঠনের নিরলস স্বেচ্ছাসেবীবৃন্দ। তাঁরা নানান প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অজোপাড়াগাঁয়ে মানুষের দোরগোড়ায় অক্সিজেন সেবা দিচ্ছে। এই কার্যক্রমে বিভিন্ন হৃদয়বান পেশাজীবি, প্রবাসী ও সাধারণ জনগণ অর্থায়ন করে অক্সিজেন সেবার কাজ ত্বরান্বিত করে।
গত ৩ রা অগাস্ট, মঙ্গলবার থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত লোটাস-বাড চ্যারিটি ফোরামের স্বেচ্ছাসেবীরা অন্তত ১৫+ জন রোগীকে তাঁদের অক্সিজেন সেবার আওতায় এনেছে। এছাড়া অক্সিজেন সেবার পাশাপাশি সংগঠনটি হতদরিদ্র রোগীদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ‘‘লোটাস-বাড ফুড এণ্ড মেডিসিন এইড’’ নামে আলাদা একটি প্রকল্প চালু করে প্রয়োজনীয় খাদ্য, ফলমূল ও প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য মেডিসিন কিংবা নগদ অর্থ প্রদান করে ঔদার্যের পরিচয় দিয়ে আসছে।
এছাড়াও লোটাস-বাড চ্যারিটি ফোরাম মো. রাকিবুল হাসানের হাত ধরে ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে সমাজ উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের সেবায় নানান পদক্ষেপ নিয়েছে। তেমন কিছু উদ্যোগ হলো, সাবলম্বীকরণ প্রজেক্ট দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্প, লোটাস-বাড ব্লাড এরেঞ্জ নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে রক্ত সংগ্রহ, সবুজ পরিবেশ নিশ্চিত করণে বৃক্ষরোপণ, অসহায় মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা, দুঃস্থ রোগীদের চিকিৎসা সেবা, গরীব ছাত্রদের শিক্ষা সহায়তা সহ নানান কাজ করে যাচ্ছে।